Tuesday, August 9, 2011

এ বছরের আলোচিত ছয় গেমস

চলতি বছরে এ পর্যন্ত বেশ কিছু নতুন গেমস এসেছে। তবে জনপ্রিয় হয়েছে কিছু গেমস।কোনোটি হয়তো গেমের জন্য, আবার কোনোটি গ্রাফিক্স, শব্দশৈলী বা গেমস ইঞ্জিনের জন্য। বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব সাইবার গেমস প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী সারমান হোসেন বললেন, ‘এখন গেমাররা সব ধরনের গেমই পছন্দ করে। আমি যেমন ফিফার মহা ভক্ত। এ ছাড়া খেলাধুলার গেমগুলো বেশি ভালো লাগে। কিন্তু আমার বন্ধুরা কৌশলগত, রোল পেয়িং এবং রেসিং গেমসের ভক্ত।’এ বছর আলোচিত ছয় গেম নিয়ে লিখেছেন সুমন পাটওয়ারী

ক্রাইসিস ২
নির্মাতা: ক্রাইটেক।
প্রকাশক: ইলেকট্রনিক আর্টস। প্রকাশ তারিখ: ২২ মার্চ, ২০১১
আমাদের পৃথিবী ভিনগ্রহের প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত। আগের মতো এবারও পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে ভিনগ্রহের প্রাণীদের সর্বনাশী থাবা থেকে। একই সঙ্গে তাদের সহায়তাকারী কিছু ক্ষমতাশালী মানুষের হাত থেকেও, যারা পৃথিবীতে থেকেও পৃথিবী ধ্বংসের পাঁয়তারা করে। তবে আগের ক্রাইসিস গেম থেকে এবারের পটভূমি পুরোটাই বদলে গেছে। কারণ, এখানে গেমার ঘন জঙ্গলের বদলে নিউইয়র্ক শহরের এখানে-সেখানে তাঁর অভিযান চালাবেন।আলক্যাটরাজ নামে এক যোদ্ধার হয়ে গেমার খেলাটি খেলবেন। কোনো একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য গেমার ইচ্ছা করলে অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন কিংবা একটা বুলেটও খরচ না করে শুধু বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ উদ্ধার করতে পারেন। মানবসভ্যতাকে বাঁচাতে গেমারকে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হবে চিন্তা করে। কারণ, সব সময়ের মতো ভিনগ্রহবাসীর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বেশ কড়া। শত্রুরা অনেক ভয়ংকর হলেও গেমারকে সাহায্য করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ।



দা উইচার ২—অ্যাসাসিনস অব কিংস
নির্মাতা: সিডি প্রোজেক্ট রেড
প্রকাশক: অ্যাটারি।প্রকাশ: ১৭ মে, ২০১১
খেলার সময় যে বিষয়গুলো গেমারকে আকৃষ্ট করে, তার সব উপাদানই আছে দা উইচার ২—অ্যাসাসিনস অব কিংসের মধ্যে। একই সঙ্গে গেম প্লে, শব্দশৈলীর ভিন্নতা, গ্রাফিক্স—সবই বেশ আধুনকিভাবে রয়েছে এতে। যার জন্য ২০১১ সালে গেমারদের আগ্রহের তালিকায় অনেক ওপরে অবস্থান করছে উইচার সিরিজের দ্বিতীয় এই গেমসটি। গেমসটি তৈরিতে সম্পূর্ণ নতুন গেম ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। যার কারণে গেমের গ্রাফিক্সকে মনে হবে সমসাময়িক যেকোনো গেমের চেয়ে অনেক বেশি বাস্তব। সঙ্গে সঙ্গে গেমের কৌশল আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল।গেমারের প্রতিটি কাজ হবে অনেক নিখুঁত। তবে এত ভালো জিনিসের সঙ্গে বেশ কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু প্রোগ্রামিং সমস্যা। যেটা হঠাৎ গেমারের সামনে এসে হাজির হয়। আর কাহিনির অসম্পূর্ণতা,যার জন্য গেমার শেষ পর্যন্ত খেলতে গিয়ে হোঁচট খান। যদিও এসব ছোটখাটো ভুলত্রুটি একটা সফল গেমসে থাকতেও পারে।


ডেড স্পেস ২
নির্মাতা: ভিসক্রেল গেমস
প্রকাশক: ইলেকট্রনিক আর্টস। প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি, ২০১১
আর্থার সি ক্লার্ক ও আইজ্যাক আসিমভ কল্পবিজ্ঞানের জনপ্রিয় এই দুই লেখকের নাম মিলিয়ে ডেড স্পেস গেমের নায়কের নাম রাখা হয়েছে ‘আইজ্যাক ক্লার্ক’।
গেমের শুরুতে গেমার স্প্রওল নামের মহাকাশস্টেশনে থাকবেন এবং নিজেকে আবিষ্কার করবেন অসংখ্য এলিয়েনদের মধ্যে, যারা গেমারকে আক্রমণ করছে। শুরুতেই আইজ্যাককে নিজের জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে নেমে যেতে হচ্ছে। এ সবকিছুর জন্য দায়ী মারকার নামের এক প্রজাতি। অন্যদিকে আইজ্যাক নিজেকে অপরাধী ভাবে তার বান্ধবীর মৃত্যুর জন্য। কারণ, সে জোর করে তাকে স্পেস ভেসেলে কাজ করতে পাঠায় এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়। গেমের প্রতিটি লেভেলের পর গেমার নতুন নতুন অস্ত্র পাবেন। আর অস্ত্র সংগ্রহের জন্য গেমারকে একের পর এক এলিয়েনকে মারতে হবে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, গেমার ইচ্ছা করলে নিজেকে এলিয়ন হিসেবে খেলতে পারবেন। তখন তাঁর কাজ হবে প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়া।

ড্রাগন এজ ২
নির্মাতা: বায়োওয়ার
প্রকাশক: ইলেকট্রনিক আর্টস।প্রকাশ: ৮ মার্চ, ২০১১
প্রাচীন নগর ফেরালডেন ও ডার্কস্পোন নামের একদল পৈশাচিক যাযাবর দলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ড্রাগন এজ গেমসের প্রেক্ষাপট। এতে আরও রয়েছে একদল বামন। সিঙ্গেল প্লেয়ার ক্যাম্পেইনের গেমটিতে নতুন কিছু চরিত্র আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে নতুন নতুন এফেক্ট আর কাহিনির ক্রমাগত উত্থান-পতন। গেমটিতে আবেগময় সম্পর্ক এবং যুদ্ধের বিষয়টি বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম দিকে সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়া, উপহার প্রদান এবং ঘনিষ্ঠ হতে হবে। বিভিন্ন লেভেলে গেমারদের সুবিধার জন্য নির্দেশনা পাওয়া যাবে। সেগুলো অনুসরণ করে বিভিন্ন চরিত্র তৈরি করা যাবে। পাশাপাশি গেমার আশপাশের প্রত্যেকের কাজ দেখে আরও বিভিন্ন বিষয় শিখতে পারবেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে খেললেগেমসে পথ চলাটা অনেক সহজ হবে। বিশেষ করে যুদ্ধের ক্ষেত্রে বেশ কৌশলী হতে হবে। গেমটিতে আরও রয়েছে আনলক সুবিধা। এর পাশাপাশি শব্দশৈলী বেশ উন্নতমানের।


পোর্টাল ২
নির্মাতা: ভালভ
প্রকাশক: ভালভ। প্রকাশ: ৮ এপ্রিল, ২০১১
কোনো কিছুকে প্রাথমিকভাবে বিচার করে মূল সিদ্ধান্তে পৌঁছানোটা ভুল। সেটা আরেকবার প্রমাণিত হবে পোর্টাল ২ গেমে। প্রথমে পাজল গেম বলে মনে হলেও, পরে খেলতে খেলতে মনে হবে এটা একটা অ্যাকশন গেমস। স্বয়ংসম্পূর্ণ সিঙ্গেল প্লেয়ার এই গেমসে আপনাকে খেলতে হবে গ্লাডস নামক রোবটের ভূমিকায়, যে হাইবারনেশন চেম্বারে জেগে উঠে দেখতে পায় তাকে আটক করা হয়েছে এবং খল কম্পিউটার তার ওপর নানা রকম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাকে আবারও পালাতে হবে এই রোবটের হাত থেকে, সঙ্গে থাকবে বিশেষ যন্ত্র ‘পোর্টাল’ আরেকটি বন্ধুভাবাপন্ন রোবট হুইটলি। গেমটির মূল চ্যালেঞ্জ হলো, বিভিন্ন পাজল সমাধান করা এবং সেটাও করতে হবে কখনো অল্প সময়ের মধ্যে, আবার কখনো শত্রুর আক্রমণ ঠেকাতে ঠেকাতে। তবে পাজলগুলো এতটা জটিল করে তৈরি হয়নি যে সেগুলো নিয়ে গেমারকে আটকে থাকতে হবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। গেমটিতে বুদ্ধির খেলা খেলে এগোতে হবে।


ডার্ট ৩
নির্মাতা: কোডমাস্টারস
প্রকাশক: কোডমাস্টারস। প্রকাশ: ২৪ মে, ২০১১
অন্য রকম রেসিংয়ের জন্য ডার্ট সিরিজের জনপ্রিয়তা সব সময়ই আকাশচুম্বী। তাই নতুনত্বের কোনো কমতি নেই ডার্ট ৩-এ। এবার গেমের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, আবহাওয়ার নানা বৈচিত্র্য। রোদ-বৃষ্টি কিংবা বরফঢাকা পথে গাড়ি দৌড়ানো যাবে ডার্ট ৩ গেমটিতে। তাই গেমারকে রাস্তা এবং আবহাওয়া বুঝে গাড়ির নির্বাচন করতে হবে।গেমে সিঙ্গেল প্লেয়ার অপশন থেকে গেমার পছন্দসই গাড়ি, রাস্তা এবং আবহাওয়াসহ নেমে পড়তে পারবেন যেকোনো রেসে। আর এতে আছে চারটি মৌসুম। প্রতিটিতে আবার চারটি করে ধাপ। একেক প্রতিযোগিতায় একেক ধরনের রেস খেলবেন গেমার। প্রতিটি রেসেরই আলাদা আলাদা স্বাদ আছে, আছে আলাদা নিয়ম। নিয়মিত রেসিংয়ের পাশাপাশি এখানে আছে প্রস্তুতি প্রতিযোগিতা।নতুন গাড়ি, নতুন জায়গা—সব মিলিয়ে নতুন আরও রেস দিয়ে ডার্ট ৩ আরও বেশি আকর্ষণীয়।
প্রথম আলো

0 comments:

Post a Comment